জমি কেনার আগে ও পরে করণীয় - আলামিন আইটিবিডি | Things to do before and after buying land
জমি কেনার আগে ও পরে করণীয় - আলামিন আইটিবিডি | Things to do before and after buying land
#জমি ক্রয়ের আগে ও পরে করনীয়।
জমি কেনার আগে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে বিক্রেতার মালিকানা এবং জমির বিভিন্ন দলিল ভালোভাবে যাচাইবাছাই করতে হবে; নইলে পড়তে পারেন বিপদে, এমনকি প্রতারিতও হতে পারেন। জমির দলিলপত্র যাচাই না করে জমি কেনা উচিত নয়।
কী কী যাচাই করতে হবে:
১. জরিপের মাধ্যমে প্রণীত রেকর্ড অর্থাৎ খতিয়ান ও নকশা যাচাই করতে হবে।
২. জমির তফসিল অর্থাৎ জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর উক্ত দাগে জমির মোট পরিমাণ জানতে হবে।
৩. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সিএস; এসএ; আরএস পরচা দেখাতে হবে।
৪. বিক্রেতা ক্রয়সূত্রে ভূমির মালিক হয়ে থাকলে তার ক্রয় দলিল বা ভায়া দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা নিশ্চিত হতে হবে।
৫. বিক্রেতা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ান বিক্রেতা বা তিনি যাঁর মাধ্যমে প্রাপ্ত তাঁর নামে অস্তিত্ব (যোগসূত্র) মিলিয়ে দেখতে হবে।
৬. জরিপ চলমান এলাকায় বিক্রেতার কাছে রক্ষিত মাঠ পরচা যাচাই করে দেখতে হবে।
৭. উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রেতার শরিকদের সঙ্গে বিক্রেতার সম্পত্তি ভাগাভাগির বণ্টননামা (ফরায়েজ) দেখে নিতে হবে।
৮. বিক্রেতার কাছ থেকে সংগৃহীত দলিল, খতিয়ান/পরচা ইত্যাদি কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে গিয়ে তলবকারী /স্বত্বলিপি রেজিস্টারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে।
৯. সর্বশেষ নামজারি পরচা ডিসিআর খাজনা দাখিল (রসিদ) যাচাই করে দেখতে হবে। জমির খাজনা বকেয়া থাকলে এবং বকেয়া খাজনাসহ জমি ক্রয় করলে বকেয়া খাজনা পরিশোধের দায় ক্রেতার।
১০. বিবেচ্য জমিটি সার্টিফিকেট মোকদ্দমা ভুক্ত কি না, কখনো নিলাম হয়েছে কি না, তা তহশিল অফিস / উপজেলা ভূমি অফিস থেকে জেনে নিতে হবে। সার্টিফিকেট মামলাভুক্ত সম্পত্তি বিক্রয়যোগ্য নয়।
১১. বিবেচ্য ভূমি খাস, পরিত্যক্ত/অর্পিত, অধিগ্রহণকৃত বা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশকৃত কি না, তা তহশিল, উপজেলা ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল এ শাখা থেকে জেনে নিতে হবে।
১২. বিবেচ্য ভূমি কোনো আদালতে মামলা–মোকদ্দমাভুক্ত কি না, তা জেনে নিতে হবে। মামলাভুক্ত জমি কেনা উচিত নয়।
১৩. বিবেচ্য জমিটি সরেজমিনে যাচাই করে এর অবস্থান নকশার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে এবং দখল সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে বিক্রেতার মালিকানা ও দখল নিশ্চিত হতে হবে।
১৪. সাব–রেজিস্ট্রারের অফিসে তল্লাশি দিয়ে জমির সর্বশেষ বেচাকেনার তথ্য জেনে নেওয়া যেতে পারে।
১৫. প্রস্তাবিত জমিটি ঋণের দায়ে কোনো ব্যাংক /সংস্থার কাছে দায়বদ্ধ কি না।
১৬. প্রস্তাবিত জমিতে যাতায়াতের রাস্তা আছে কি না, তা–ও দেখা প্রয়োজন।
জমি ক্রয়ের পর আপনার করনীয়ঃ
যে কোন দলিলের মাধ্যমে বা উত্তরাধিকার সুত্রে জমি প্রাপ্তির পর আপনার মালিকানা স্বত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবেঃ
১) দলিল রেজিস্ট্রির পর আমিন দ্বারা জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে পূর্বের মালিকের কাছ থেকে দখল বুঝে নিন।
২) জমিতে আপনার দখল প্রতিষ্ঠার জন্য জমির প্রকৃত ব্যবহার তথা চাষাবাদ, গাছপালা রোপন, ঘরবাড়ি নির্মাণ ইত্যাদি করুন।
৩) রেজিস্ট্রি অফিস থেকে মূল দলিল পেতে দেরি হলে মূল দলিলের নকল বা সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করুন।
৪) দলিলের নকল প্রাপ্তির পর দ্রুত সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে আবেদন করে নিজ নামে নামজারি/খারিজ (মিউটেশন) করুন, কারন দখল এবং নামজারি করতে দেরি করলে অসাধু বিক্রেতা আপনার ক্রয়কৃত জমি অন্যত্র বিক্রয় করতে পারে।
৫) সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে নামজারি হলে, নামজারি খতিয়ান এবং ডি,সি,আর, সংগ্রহ করুন এবং নতুন হোল্ডিং এ ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধ করে দাখিলার কপি সংগ্রহপূর্বক সংরক্ষণ করুন।
৬। নিয়মিতভাবে প্রতিবছর ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধ করুন।
৭। সম্পত্তির মূল মালিক মারাগেলে মৃত ব্যক্তির জীবিত ওয়ারিশগণ সম্পত্তির নিজ নিজ অংশ পৃথকীকরনের জন্য নিজেদের মধ্যে ‘বন্টননামা’ দলিল প্রস্তুত করে রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি এবং ভূমি অফিসে নামজারী করুন।
#সংগ্রহীত
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন